পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় - আমাদের মুক্তিযুদ্ধ | | NCTB BOOK

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও শিক্ষকদের বাসভবনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্নস্থানে একযোগে আক্রমণ করে। এ সময় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পুলিশ সদস্যরা তাঁদের থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে সশল্প প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু হানাদার বাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের আক্রমণে তাঁরা টিকে থাকতে পারেন নি। সেই ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনী দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরেও আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ইপিআর সদস্যসহ অসংখ্য নিরীহ বাঙালী জনগণকে হত্যা করে। এটি বিশ্বের বুকে নৃশংসতম গণহত্যা ও ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের এক ঘূপিত উদাহরণ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল 'অপারেশন সার্চলাইট । ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহিদ হন। এক কোটির বেশি মানুষ তাঁদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে প্রাণের ভয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে সংঘটিত নির্মম গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে প্রতিবছর ২৫শে মার্চ 'জাতীয় গণহত্যা 'দিবস' পালন করা হয়।

এদেশের কিছু মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তারা শান্তিকমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল-শামস নামে বিভিন্ন কমিটি ও সংগঠন গড়ে তোলে। এরা মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা তৈরি করে হানাদারদের দেয়। রাজাকাররা হানাদারদের পথ চিনিয়ে, ভাষা বুঝিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সাহায্য করে ।

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করে। ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে তারা আমাদের অনেক গুণী শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক এবং কবি-সাহিত্যিকদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাঁদের স্বরণে প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর 'শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস' পালন করা হয়।

 

ক. এসো বলি

মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে পাকিস্তানি বাহিনী কেন এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল- শিক্ষকের সহারতার আলোচনা কর।

 

খ. এসো লিখি

বিষয়বস্তু ২ ও ৪ এর আলোকে নিচের ছকটি পূরণ কর :

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাহিনীমুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের বাহিনী

 

গ. আরও কিছু করি

এখানে কয়েকজন শহিদ বুদ্ধিজীবীর ছবি দেওয়া আছে। তারা কে কোন ক্ষেত্রে বিখ্যাত ছিলেন তা খুঁজে বের কর :

ক. অধ্যাপক গোবিন্দচন্দ্ৰ দেব                খ. অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী                     গ. অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার    

ঘ. অধ্যাপক রাশীদুল হাসান                   ঙ. সাংবাদিক সেলিনা পারভীন               চ.  ফা. আলীম চৌধুরী

ছ. ডা. আজহারুল হক

 

ঘ. যাচাই করি

বাক্যটি সম্পূর্ণ কর :

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য………………………………………………………………………………….।

Content added || updated By
Promotion